post
শিক্ষা

বৃত্তি পেয়েও বাংলাদেশি ছাত্ররা যেতে পারছে না আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে! কেনো?

এলামী মো. কাউসার, কায়রো, মিশর: বাংলাদেশি ছাত্রদের আর যাওযা হচ্ছে না আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে! কথা টা শুনে কেমন মনে হলেও এটাই হয়তোবা সত্যি হতে যাচ্ছে। কেননা বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারিভাবে বৃত্তি প্রাপ্ত হয়েও কোন বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীর আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা সম্ভব হয়নি। মূলতঃ মিশরে সরকারিভাবে ছাত্র ও শ্রমিকদের আনা নেয়া শুরু হয় নব্বই সালের পর থেকে। তারপর ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে ২০০১ সালে থেকে শুরু হয়ে ২০১৯ অথবা ২০২০ পর্যন্ত চলতে থাকে এর ধারাবাহিকতা। কিন্তু কোন এক ধূসর কালো ছায়ায় বন্ধ হতে চলেছে দেশের হাজারো তরুনদের স্বপ্নের চাওয়া আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ। তরুণরা কেনইবা এই স্বপ্ন দেখবে না বলুন? অথবা কেনইবা ছেড়ে দেবে সরকারি বৃত্তি পেয়েও পৃথিবীর প্রাচীনতম ও স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি পড়ার সুযোগ? আফ্রিকার ছয়টি দেশের সরকার প্রধান, বিরোধীদলীয় নেতা, মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট, বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি, মুসলিম বিশ্বে নোবেল খ্যাত কিং ফায়সাল পুরস্কার জিতেছে দর্শন, ধর্ম ও সামাজিক কাজে গবেষণায় আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র শিক্ষক সহ মধ্য প্রাচ্যের অনেক বড় মুসলিম শিক্ষার্থী। এছাড়াও বাংলাদেশের গর্বিত সন্তান সৈয়দ মুজতবা আলী, হাজী শরীয়তুল্লাহ, বর্মানে জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আযহারীসহ ইন্দোনেশিয়া, মালোয়শিয়া, সিংগাপুরসহ পৃথিবীর নানা মুসলিম দেশে মন্ত্রী ও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও নানাবিধ সুযোগ সুবিধা প্রদান করার কারনে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের আকর্ষণের তালিকায় রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। পৃথিবীর এমন একটি দেশ হয়তোবা পাওয়া যাবে না যে দেশের দুই একটি ছাত্র হলেও আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে মিলবে না।কিন্তু হঠাৎ কেন বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের সেই আশায় গুড়েবালি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ অবস্থিত মিশর দূতাবাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে ভর্তি প্রসেসিং করা হয় সেখানে নকল ও অবৈধ কাগজপত্র দাখিল, বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি জটিলতা এবং বাংলাদেশি ছাত্রদের অবৈধভাবে মিশরে এনে ভর্তি সহ এই ধরনের নানা অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশি ছাত্রদের বিরুদ্ধে।এই সম্পর্কিত অভিযোগ মিশর দূতাবাসের মাধ্যমে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন অফিসে গেলে নড়েচড়ে বসে মিশরের পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশনের গোয়েন্দা সংস্থা।এই বিষয়ে জানতে চাইলে মিশর দূতাবাসে কাউন্সিলর মিনা মিকারী বলেন, যারা ছাত্র এবং ভ্রমণ ভিসায় সাধারণ পাসপোর্টে মিসরে যাওয়ার জন্য আবেদন করে আমরা মূলত তাদের সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে মোফায় পাঠাই। তারপর সেখান থেকে মানদুব হয়ে পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশনে (আব্বাসিয়া) পাঠানো হয় সেখান থেকে অনুমতি অথবা ছাড়পত্র আসলেই আমরা ভিসা দেই। সরকারি ও ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্টের জন্য এই ধরনের কোনো শর্ত নেই। মূলতঃ সমস্যা টা এখানেই। মিশরের পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন‌অফিসে পড়ে আছে অসংখ্য বাংলাদেশি ভ্রমণ প্রত্যাশীদের ভ্রমন ফাইল যেন দেখার কেউ নেই।এছাড়াও সরকারি বৃত্তি পাওয়ার পরেও যারা যেতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা অনেকেই এই প্রতিবেদক কে জানান যে তাদের কেউ এক বছর কেউ দুই বছর আগে অথবা কেউ নতুন বৃত্তি পাওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে না পারছেন না। এ নিয়ে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং দায়ী করেন কুটনৈতিক ব্যর্থতাকে।এই দিকে তারা বছরের পর বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কারন এই আশায় বুক বেঁধে অনেকেই অন্য কোথাও আর ভর্তি হয়নি।এই প্রতিবেদককে মিশরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর ও বাংলাদেশ পুলিশের এসপি ইসমাইল হোসেন বলেন, "বিষয়টি আমরা আপনার মাধ্যমে জানলাম আসলে অবাক হওয়ার মত একটা বিষয় এবং বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়।"এই বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রদূত সারের মাধ্যমে দ্রুত কতৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসে একটা সমাধান বের করবো, বলেন ইসমাইল হোসেন। এছাড়াও মিশরে অবস্থিত একমাত্র ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন চায় দ্রুত অবসান হোক এই সমস্যার। আবার অবাধ বিচরণ হোক বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্বের এই প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একেকজন হয়ে উঠুক সৎ দক্ষ দেশপ্রেমিক এটাই প্রত্যাশা সকলের।

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.