post
বিশেষ প্রতিবেদন

বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি ও রঙহীন ভবিষ্যৎ - আবুবকর হানিপ

বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি এক কঠিন বাস্তবতা এবং গভীর আবেগপূর্ণ বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। সময়ের ব্যবধানে ছাত্ররাজনীতি আমাদের একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের আলো ম্লান করে দিয়েছে এবং তরুণদের ভবিষ্যেক ঠেলে দিয়েছে অনিশ্চয়তার মুখে। ছাত্ররাজনীতির ক্ষতিকর দিকগুলোই হয়ে উঠেছে প্রকট। আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপান, সৌদি আরব বা এমনকি ভারতের মতো দেশগুলোর দিকে তাকাই, এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের এক তীব্র বৈপরীত্য দেখতে পাই।ওই সব দেশে ছাত্ররাজনীতি নেই বললেই চলে। অথচ বাংলাদেশে তা শিক্ষাব্যবস্থার গভীরে প্রোথিত হয়ে রয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই কোমলমতি শিক্ষার্থীর মন ও হৃদয় রাজনীতির জালে জড়িয়ে পড়ে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিপরীত মেরুর দিকে নিয়ে যায়। একসময়ে তা জাতীয় ঐক্যে আঘাত হানে আর ভেঙে দেয়।তখন সহপাঠী আর এক বেঞ্চিতে বসতে পারে না। এক পর্যায়ে এই বিভাজন কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এমন শত্রুতার বীজ বপন হয়, যা নাগরিক সমাজেও প্রতিফলিত হতে থাকে। ফলে একসময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকা মানুষের মাঝেও সৃষ্টি করে বিরোধ।বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার পরপরই স্রেফ হলের আসন পাওয়ার মতো মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করতেই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রবল চাপে পড়ে যায়যারা কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততায় থাকে না, তারা ভালো আসন পেতে চরম বৈষম্যে পড়ে। বলা চলে, পায়ই না। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি পরিবেশ বিরাজ করে, যা মেধার চেয়ে রাজনৈতিক আনুগত্যকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আর তা নিঃসন্দেহে শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতিকর।ছাত্ররাজনীতির সবচেয়ে মর্মন্তুদ দিকটি হলো শিক্ষার্থীর মেধার ওপর এর গভীর কালো ছায়া ফেলার ক্ষমতা।পুলিশ, সামরিক বাহিনী, শিক্ষকতা, চিকিৎসা এবং প্রকৌশল ক্ষেত্রের নিয়োগে সরকারি প্রভাব। বিশেষ করে বিসিএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক আনুগত্য প্রায়ই একাডেমিক মেধাকে ছাপিয়ে যায়। এই সমস্যা শুধু নিয়োগপ্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির ওপরও গভীর প্রভাব ফেলছে। একাডেমিক বিষয়ে রাজনৈতিক গোষ্ঠীর, বিশেষত শাসকদলের সম্পৃক্ততা শিক্ষাজীবনের বাইরেও প্রভাব ফেলে। পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বের (উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য) নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মেধাভিত্তিক নিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে, যার ফলে শিক্ষার গুণগত মানের অবনতি ঘটছে। নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রায়ই রাজনৈতিক আনুগত্য একাডেমিক মেধাকে ছাপিয়ে যায়, যা বৈশ্বিক শিক্ষাগত র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশকে ক্রমাগত অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপক সম্পৃক্ততা ও প্রভাব ক্যাম্পাসে সহিংসতা এবং অনৈতিক কার্যকলাপের জন্ম দিয়েছে। এই সমস্যাগুলো শুধু একাডেমিক কার্যক্রমকেই ব্যাহত করছে তা নয়, শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক মঙ্গলকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। লক্ষ করা গেছে, শাসকদল যখন কাউকে গুরুদায়িত্ব দেয়, সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে পদের গুরুত্বটি প্রায়ই অগ্রাধিকার হারায়, বরং সব প্রচেষ্টা থাকে পদ ধরে রাখার বা ব্যক্তিগত স্বার্থে নিজের আখের গোছানোর দিকে কেন্দ্রীভূত হয়, যা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। শিক্ষাব্যবস্থার ওপর এই রাজনৈতিক প্রভাব মেধার বিকাশকে রুদ্ধ করছে। ফলে মেধাবীরা যথাযথ স্বীকৃতি এবং সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে দেশের সবচেয়ে উজ্জ্বল মেধাবীরা হতাশায় ভুগতে শুরু করে এবং অনেকেই দেশের স্বপ্ন ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দেয় কিংবা বেআইনি পথে পা বাড়ায়। মেধার যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ার কারণে জাতির ভবিষ্যৎ তরুণরা হতাশার গভীরে তলিয়ে যেতে থাকে, যা দেশের জন্য একটি গভীর সংকট তৈরি করছে। এহেন পরিস্থিতি স্পষ্ট করে দেয় যে যখন রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে প্রকৃত যোগ্যতার মূল্যায়ন উপেক্ষিত হয়, তখন একটি পুরো জাতির সম্ভাবনা ব্যাহত হয় এবং দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়।যখন শিক্ষক নিয়োগ হয় তার রাজনৈতিক সংযোগের ভিত্তিতে এবং মেধার মূল্যায়ন উপেক্ষিত হয়, তখন এর প্রভাব শিক্ষার গুণগত মান এবং শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক শিক্ষাগত অভিজ্ঞতার ওপর গভীরভাবে পড়ে। এই মানসিকতা বাংলাদেশের অগ্রগতির পথে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এর মূল্য দিতে বাধ্য হচ্ছে। প্রমাণ মেলে যখন আমরা দেখি অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক মানে উন্নতি করছে, আর আমাদের রাষ্ট্রীয় এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে অনেক পিছিয়ে পড়ছে।উপযুক্ত পরিবেশ ও সহায়তা পেলে বাংলাদেশিরা বিশ্ব পর্যায়ে অনন্য অবদান রাখতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, বিদেশে অধ্যয়ন করা বাংলাদেশিরা; যেমন—নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মাইক্রোক্রেডিট এবং সামাজিক ব্যবসার পথিকৃৎ; ড. ফজলুর রহমান খান, উঁচু ভবনের জন্য ‘টিউবুলার ডিজাইনের জনক’, যিনি বিখ্যাত সিয়ার্স টাওয়ার ডিজাইন করেছিলেন এবং যাঁকে প্রায়ই ‘স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আইনস্টাইন’ এবং ‘বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার’ বলা হয়; ড. মোহাম্মদ আতাউল করিম, একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী; ইন্টেলের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ওমর ইশরাক; সোনো আর্সেনিক ফিল্টারের উদ্ভাবক ড. আবুল হুসাম এবং টেভোজেন বায়োর সিইও ড. রায়ান সাদি বিশ্বব্যাপী যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। তাঁদের এই অসামান্য সাফল্য আমাদের গর্বিত করে, যা আমাদের জাতির অসীম সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। এ ছাড়া শিক্ষা, প্রকৌশল, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আইটি, এমনকি ব্যবসাক্ষেত্রেও অসংখ্য বাংলাদেশি রয়েছেন, যাঁরা প্রবাসে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন, জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশের স্থানীয় রাজনীতিতেও আমরা অনেক বাংলাদেশিকে দেখি তাঁদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন। এটিই মেধার বিকাশ। সঠিক পরিবেশই তাঁদের এই অগ্রগতিতে সহায়তা করেছে।অনস্বীকার্য যে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের অসামান্য ও প্রশংসনীয় ভূমিকা ছিল। কিন্তু বর্তমানে ছাত্ররাজনীতিতে বিভাজন, সংঘাত, রাজনৈতিক নেতাদের আড়ালে চাঁদাবাজি, র্যাগিং, বুলিং, সহিংসতা, অসাধু ভর্তি বাণিজ্য এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয় সৃষ্টির মতো নেতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট। বর্তমান ছাত্ররাজনীতির ভয়াবহ থাবা শিক্ষার মূল লক্ষ্য—শিক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবন থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে।জাপান, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নেই বললেই চলে, যা তাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং সামগ্রিক অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এই দেশগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের শক্তিকে একাডেমিক উত্কর্ষ, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের দিকে ধাবিত করেছে রাজনৈতিক জটিলতায় জড়িয়ে না ফেলে। জাপানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার গুণমানকে অগ্রাধিকার দেয়, জার্মানির ছাত্রসংগঠনগুলো মূলত কল্যাণ ও প্রশাসনিক বিষয়ে কাজ করে। দক্ষিণ কোরিয়া, যা একসময় ছাত্র আন্দোলনের জন্য বিখ্যাত ছিল, এখন একাডেমিক বিষয়ে মনোনিবেশ করেছে। সিঙ্গাপুরে সরকারের কঠোর নিয়মাবলি শিক্ষাকে জাতীয় উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছে ছাত্ররাজনীতিকে দূরে রেখে।এই দেশগুলো তাদের ছাত্রদের গঠনমূলক বিকাশ এবং জাতীয় উন্নয়নের জন্য কাজে লাগিয়ে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশও এই উদাহরণগুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারে। যদি আমরা সত্যি আমাদের দেশের উন্নতি চাই, তবে আমাদেরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিরুৎসাহ করে মেধা এবং একাডেমিক উত্কর্ষের ওপর জোর দিতে হবে। বাংলাদেশ তার শিক্ষার্থীদের সেই নেতৃত্বের দিকে ধাবিত করতে পারে, যা শিক্ষা, উদ্ভাবন এবং জাতি গঠনে প্রধান ভূমিকা রাখবে, রাজনৈতিক বিভাজনের খেলায় নয়।এখনই সময় বাংলাদেশ এই সফল দেশগুলোর পথ অনুসরণ করে শিক্ষায় মেধার বিকাশ এবং শিক্ষার্থীদের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ছাত্ররাজনীতির ওপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা চরমপন্থা মনে হতে পারে, কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় শিক্ষা এবং মেধাতন্ত্রকে প্রাধান্য দেওয়ার এক জরুরি আহ্বান জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের দিকে অনুপ্রাণিত করার মানেই হচ্ছে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য পথ প্রশস্ত করা। বর্তমান ছাত্ররাজনীতি চর্চার পরিবর্তে আমি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘ছাত্রসংসদ’ নামে পরিচিত স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এসজিএ) কার্যক্রম চালুর প্রস্তাব করছি। তবে এই সংস্থাগুলো অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে অরাজনৈতিক থাকতে হবে। এসজিএগুলো প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক উন্নয়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে পারে, এমনকি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে মতামত প্রকাশের জন্য শিক্ষার্থীদের আবেগকে চালিত করতে পারে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মুক্তচিন্তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার চেতনা জাগিয়ে তুলতেও এরা ভূমিকা রাখতে পারে।ছাত্রশক্তিকে একত্র করতে যে ছাত্রদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে না তার প্রমাণ আমরা সম্প্রতি বিশ্বপরিমণ্ডলে পেয়েছি গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীদের সোচ্চার হতে দেখেছি একটি অন্যায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে তথা মানবতার বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে। আর বাংলাদেশে আমরা দেখেছি শিক্ষার্থীদের জাগরণ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তারা সোচ্চার হয়ে নিশ্চিত করেছে তাদের বিজয়। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির বর্তমান জটিলতা জাতীয় বিভাজন, মেধাতন্ত্রের ক্ষয় এবং শিক্ষার অঙ্গীকারের হ্রাস ঘটিয়েছে। ছাত্ররাজনীতি যেখানে কম প্রভাব রাখে এমন দেশের সঙ্গে এই বাস্তবতার বৈপরীত্য আমাদের জন্য একটি জাগরণী হিসেবে কাজ করা উচিত। এখন সময় এসেছে দেশপ্রেমিক এবং সচেতন মানুষের একত্র কণ্ঠে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার।আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্ররাজনীতির ভূমিকা পুনর্বিবেচনা করা জরুরি, যাতে আমরা শিক্ষিত, উদ্ভাবনী এবং ঐক্যবদ্ধ মানুষের একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারি, যারা জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আশাভরা হৃদয়ে আমাদের তরুণদের মাঝে নতুন সম্ভাবনার আগুন প্রজ্বালিত করতে হবে, তাদের দ্রুত উত্থিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।লেখক : চ্যান্সেলর ও চেয়ারম্যান, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র (www.wust.edu) এবং প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পিপলএনটেক (www.peoplentech.com)

post
বিশেষ প্রতিবেদন

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি সাংবাদিকদের

তামাক নিয়ন্ত্রণে সাংবাদিকদের কার্যকর ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে নারী মৈত্রীর আয়োজনে “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সাংবাদিকদের নিকট প্রত্যাশা ও করণীয়” বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা আয়োজিত হয়েছে। বুধবার ৯ অক্টোবর ২০২৪, সকাল ১১:০০ টায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে বিশেষজ্ঞ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক, অনকোলজিস্ট এবং প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, লীড পলিসি এ্যাডভাইজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এবং বাংলাদেশ এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বিসিআইসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব রাশেদ রাব্বি, সভাপতি, হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম। শামীম মেহেদী, চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, গ্লোবাল টিভি, প্রথম আলোর যুগ্ম–সম্পাদক জনাব সোহরাব হাসান, শাহনাজ বেগম পলি, সদস্য, ব্যবস্থাপনা কমিটি, জাতীয় প্রেস ক্লাব এবং জুলহাস আলম, ঢাকা ব্যুরো প্রধান, নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা—এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, জাতীয় প্রেস ক্লাব। এছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সুশান্ত কে সিনহা, স্পেশাল করস্পনডেন্স,৭১ টিভি। জনাব মোঃ আব্দুস সালাম মিয়া, প্রোগ্রাম ম্যানেজারস, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ এবং হুমায়রা সুলতানা, কমিউনিকেশনস ম্যানেজার , ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ।“তামাক কোম্পানিগুলো নানামুখী অপ-কৌশলে বিভ্রান্ত না হওয়ার কথা জানান সুশান্ত কে সিনহা, তিনি বলেন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধিকতর সংশোধনী আনার যে উদ্যোগ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে একটি সময়োচিত এবং জনবান্ধব উদ্যোগ। তবে বেশ কিছু ধাপ পার হলেও আইনটিকে চূড়ান্ত রূপ পেতে হলে আরো কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। এখনও এটি পাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এটিকে আইনে রূপান্তরের পথে নানা রকম বাধা আসার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে সংশোধনীর বিপক্ষে তামাক কোম্পানিগুলো নানামুখী অপ-কৌশল ও অপ-তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা নানা রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করে জনবিভ্রান্তি তৈরি করছে। এক্ষেত্রে আমাদের সাংবাদিক বন্ধুদেরকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। রাশেদ রাব্বি বলেন, “ তামাক থেকে সরকারের যে রাজস্ব আয় আসে তার চেয়ে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা বাবদ ব্যয় ৩৪ শতাংশ বেশি। রাজস্ব আয় প্রায় ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা এবং চিকিৎসা ব্যয় প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। তামাকের কারণে বার্ষিক ক্ষতি প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা (ক্যান্সার সার্ভে-২০১৮)। সুতরাং মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর করার পাশাপাশি প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা” আর একটি প্রানও যাতে না হারাতে হয় তামাকের কারনে সে প্রেক্ষাপটে সোহরাব হাসান বলেন, “প্রতিদিন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন এই ভয়ঙ্কর তামাকের আগ্রাসনে। তামাকের এই সর্বগ্রাসী আগ্রাসন ও তামাক মহামারী আমাদের জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। আমাদের তামাকের ভয়াবহতা সম্পর্কে আরও সোচ্চার হতে হবে ।পাশাপাশি তামাক কোম্পানির গুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে”শামীম মেহেদী বলেন, "তরুণরা ই-সিগারেটের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদের এই আসক্তি থেকে বের করে আনতে ই-সিগারেট বাজারজাত বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি।মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন," তামাক একটি প্রাণঘাতী দ্রব্য। তামাকের পক্ষে বলার মতো একটি শব্দও নেই। তামাক পরিবেশ, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। টোব্যাকো এটলাস ২০১৮- এর তথ্য মতে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মানে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারান । জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় ও জীবন রক্ষায় দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে এখনই। আইন শক্তিশালী করবার এই পদক্ষেপ বেগবান করতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারেন আমাদের গণমাধ্যমের বন্ধুগণ,যাদের সবচেয়ে বড় শক্তি তাদের লেখনি ও গণমাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের কাছে পৌছানোর কৌশল”বিশেষজ্ঞ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড: গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের কারণে মুত্যুর প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী তামাক। তামাকের কারণে ফুসফুস ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার, মুখগহ্বরের ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় তামাক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক অন টোব্যাকো কন্ট্রোল—এফসিটিসি’তে স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ হলেও ধুমপানমুক্ত পরিবেশ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এখনও সর্বোত্তম মান অর্জন করতে পারেনি। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশ এবং শক্তিশালী করা অতি জরুরী। যা তামাকমুক্ত সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে।সভাপতির বক্তব্যে শাহীন আকতার ডলি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, গর্ভপাত এবং সন্তান জন্মদানে মা ও শিশু উভয়ই মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের তাগিদ জানান অন্যান্য আলোচক ও অতিথিরা। আলোচকগণ তাদের বক্তব্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত বিষয়গুলো যেমন- অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সব পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের সব প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করার প্রতি জোরারোপ করেন।

post
বিশেষ প্রতিবেদন

পর্বত স্বাভাবিক থাকলে আমরা ভালো থাকব

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, পাহাড় পর্বত স্বাভাবিক থাকলে আমরা ভালো থাকব। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য এই পাহাড়গুলোকে সংরক্ষণ করা অপরিহার্য। জলবায়ু পরিবর্তন পর্বত, হিমবাহ এবং প্রতিবেশ ব্যবস্থার জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি সৃষ্টি করে। হিমবাহের গলে যাওয়া জীববৈচিত্র্য এবং পানির ওপর নির্ভরশীল লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকাকে প্রভাবিত করে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার তাগিদ দেয়। শুক্রবার (৩১ মে) মাউন্ট এভারেস্ট দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে নেপাল দূতাবাসের আয়োজনে 'মাউন্টেন মেমোরিজ: কানেক্টিং পিক্স অ্যান্ড পিপল' শীর্ষক ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাবের চৌধুরী বলেন, মেধাবী ফটোগ্রাফারদের ছবিগুলো আমাদের জীবনে প্রকৃতির গভীর প্রভাবের কথা মনে করিয়ে দেয় এবং সেই পরিবেশকে লালন ও রক্ষা করতে অনুপ্রাণিত করে। পর্বত আমাদের সীমানা পেরিয়ে নেপাল ও অন্যান্য জাতির সঙ্গে পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও জলবায়ু স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতিতে একত্রিত করে। মন্ত্রী ফটোগ্রাফারদের শিল্পকর্মের জন্য প্রশংসা করে বলেন, আপনাদের কাজ কেবল আমাদের আনন্দিত ও অনুপ্রাণিত করে না, বরং আমাদের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

post
বিশেষ প্রতিবেদন

সিনেমা হল ভেঙে তৈরি হচ্ছে মাদরাসা

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ এলাকার ছন্দা সিনেমা হলটি অবশেষে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সিনেমা হলটি ভেঙে প্রতিষ্ঠা করা হবে ইদরিসিয়া দারুল কুরআন মাদরাসা নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে বিক্রির প্রক্রিয়া শেষ বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ ও মাদরাসার জিম্মাদার মাওলানা মোকাররম হোসেন। সিনেমা হলের জমিটি কেনার জন্য ২০ লাখ টাকা বায়নাও করা হয়েছে। ইদরিসিয়া দারুল কুরআন মাদরাসার জিম্মাদার মাওলানা মোকাররম হোসেন বলেন, জমির বায়না করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য বিত্তবানসহ সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্যও চাওয়া হচ্ছে। আশা করি, খুব দ্রুতই জমির নির্ধারিত মূল্যের বাকি টাকা পরিশোধ করে মাদরাসা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। দলিলসহ প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রবীণ চলচ্চিত্র প্রয়োজক শামসুর রহমান পিন্টু বলেন, দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন শিল্প ক্রান্তিকাল পার করছে। ক্রমশ নিভে যাচ্ছে দেশের হলগুলোর রূপালী পর্দার আলো। নরসিংদীতে গত দুই দশকে বন্ধ হয়ে গেছে ১৫টির বেশি প্রেক্ষাগৃহ। সবশেষ হাসনাবাদের ৯০ দশকের ছন্দা সিনেমা হলটি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ঢিমেতালে নরসিংদীতে টিকে আছে দু-একটি সিনেমা হল। তাছাড়া বর্তমান ডিজিটাল যুগে সবার হাতে স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট থাকায় এখন সিনেমা, নাটকসহ চিত্তবিনোদন হাতের মুঠোয়। তাই এখন আর সিনেমা হলে যেতে হয় না। মানুষ মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ-ডেক্সটপেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিনেমা, নাটক ইত্যাদি দেখে থাকে। সিনেমা হলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমন খান জানান, বর্তমানে সিনেমা ব্যবসা মন্দা হওয়ায় তাদের অবস্থা শোচনীয়। মালিকপক্ষ ঠিকমতো বেতন দিতে পারে না। সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই অন্য পেশা বেছে নিচ্ছে। ছন্দা সিনেমা হলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রুবেল আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন লোকসান গুনে হলটি চলছিল। মাস শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, জেনারেটরসহ নানা মেইনটেন্যান্স খরচ রয়েছে। লোকসানি এ প্রতিষ্ঠানটি আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েক বছর আগেও সপ্তাহে দু-একটি সিনেমা রিলিজ হতো, এখন মাসেও একটি হয় না।

post
বিশেষ প্রতিবেদন

বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি কোনটি?

মানব সভ্যতার অন্যতম সেরা আবিস্কার হলো- চাকা। বৃত্তাকার গোলকটি তৈরি হবার সঙ্গে সঙ্গে এটাও ঠিক হয়ে যায়, গাড়ি আবিস্কারের বিষয়টি। প্রথম গাড়ি থেকে হাল ফ্যাশনের গাড়ি, এই দীর্ঘপথে অনেক চড়াই উৎরাই পার হতে হয়েছে অটোমবিল শিল্পকে। শখের গাড়ি এখন মানুষের অপরিহার্য বাহন। তাই বলে অটোমবিল শিল্প থেকে শখের বিষয়টি চলে যায়নি। মানুষের শখ পূরণে তৈরি হয় বিলাসবহুল সব গাড়ি। যার দামও আকাশচুম্বী। প্রায় আমাদের মনে প্রশ্ন আসে, বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি কোনটি? প্রশ্নটির সহজ কোন উত্তর নেই। এর সবচেয়ে বড় কারন শখ, শখের শেষ বলে কি কিছু আছে। কথায় বলে শখের তোলা আশি টাকা। আসলেই তাই। শখের উপর নির্ভর করে বিলাসবহুল গাড়ির দাম। একটু খোলাসা করেই বলা যায়। ধরুন, কোন ধনকুবের শখ হলো তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি তার গ্যারজে রাখতে চান। সেই অনুযায়ী, বিলামবহুল গাড়ি নির্মাতারা তাঁকে সেটি বানিয়েও দিলো।কিন্তু এরপরই আরেক ধনকুবের শখ হলো সেটিকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার। গাড়ি নির্মাতারা আর বসে থাকবে না। বানিয়ে ফেলবে আগেরটির চেয়েও আরেকটি দামি গাড়ি। এজন্যই বিলাসবহুল গাড়িগুলোকে বলা হয় ধনীদের শখ আর গাড়ি নির্মাতাদের যন্ত্রকৌশলের উচ্চাভিলাষী উদ্ভাবনী শক্তির মিশ্রন। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল গাড়িগুলো তৈরিই করা হয় ধনীদের কথা মাথা রেখেই। এসব গাড়ি কখনও শো রুমে রাখা হয় না। কিনতে হলে দিতে হয় আগাম কার্যাদেশ। এরপর অপেক্ষা, ছয় থেকে এক বছর পরেই হাতে পাওয়া যায় গাড়ি। অভিজাত গাড়িগুলো প্রকৌশল শ্রেষ্ঠত্বেকে মূর্ত করে এবং কিছু নির্বাচিত কয়েকজনের জন্য সেগুলো সংরক্ষিত থাকে, তাদের জন্যই যারা স্বচালিত শিল্পকলার একটি অতুলনীয় অভিজ্ঞতা চায়। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল গাড়িগুলো তৈরি হয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, ব্যতিক্রমী ও আকর্ষনীয় ডিজাইন, আরামদায়ক অভ্যন্তরীণ সজ্জা এবং সর্বোপরি ইঞ্জিনের সক্ষমতাকে সামনে রেখে। এসব কারণে অভিজাত গাড়িগুলোর কোন বিকল্প হয়, বাজারে সবার থেকে আলাদা করে তোলে।এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল গাড়িগুলোর কথা এবার জানা যাক। বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়িটি হলো রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল। এটির দাম ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এটির দাম পড়বে তিনশ’ ৬০ কোটি টাকার বেশি। লা রোজ হল দুই-সিটের সুপারকার। এটির বডি তৈরি হয়েছে কার্বন, ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে। রা রোজ ৫ দশমকি ৩ মিটার লম্বা এবং দুই মিটার চওড়া। বিভিন্ন কোণ থেকে দেখলে এর বডির রঙ পরিবর্তন হয়। প্রায় দেড়শ ধরনের পরীক্ষা চালিয়ে এই গাড়ির রঙ বের হয়েছে এবং রঙের মিশ্রনটি গোপন রাখা হয়েছে। এটিকে বলা হচ্ছে কালো গোলাপ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি গাড়ির স্থানটিও দখলে রেখেছে রোলস রয়েস। একই কোম্পানি বোট টেইল মডেলের গাড়িটি ফোর্বস সাময়িকীর বিচারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি গাড়ি। এটির দাম ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় তিনশ কোটি টাকার উপরে। এটিতেও রয়েছে অবিশ্বাস্য সব ফিচার।রোলস রয়েস সাধারণত ধনীদের জন্যই গাড়ি তৈরি করে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি উড়োজাহাজের ইঞ্জিন তৈরি করে থাকে। সে যাক, এবার আসা যাক, তৃতীয় সর্বোচ্চ দামি গাড়ির কথায়। এটি তৈরি করে ফ্রান্সের বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বুগাতি। এই ব্রান্ডের একটি গাড়ি নীতা আম্বানির গাড়ি বহরে রয়েছে। বুগাতি লা ভার্চু নোয়া হলো এই মুহূর্তে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ দামি গাড়ি। এটির দাম ১৫ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় পড়বে একশ’ ৮০ কোটি টাকার বেশি। এটি একটি অভিজাত স্পোর্টস মডেলের আদলে তৈরি কালো রংয়ের গাড়ি। এটির ডিজাইন যে কারো মাথার ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ির তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাগানি জোন্ডা এইচপি বারসেট্টা মডেলের গাড়ি, এটির দাম বাংলাদেশি টাকায় একশ’ ৭৫ কোটি টাকার বেশি। পঞ্চম স্থানে- এসপি অটোমেটিভ কেওয়স। এটির দাম ১৪৪ কোটি টাকা। ষষ্ঠ স্থানে আবারও রোলস রয়েস সুইপটেইল, দাম ১৩০ কোটি টাকা।সপ্তম স্থানে থাকা বুগাতি সেন্টোডিসি মডেলটির দাম ৯০ কোটি টাকা। অষ্টম স্থানে থাকা মার্সিডিজের মেবাখ এক্সেলেরো মডেলটির দাম বাংলাদেশি টাকায় ৮০ কোটি টাকা। নবম স্থানে আছে পাগানি হুয়ারা কোডালুঙ্গা ও দশম স্থানে বুগাতি ডিভো মডেল। এই দুটোর দাম যথাক্রম ৭৫ ও ৬০ কোটি টাকা। 

post
বিশেষ প্রতিবেদন

মন ভালো রাখতে মেনে চলুন কিছু নিয়ম

মন ভালো রাখতে আমরা কত কিছুই না করি। তবে সহজ কিছু উপায় আছে যেগুলো মেনে চললে মন ভালো রাখা যায়। আসুন টিপসগুলো জেনে নেই: ঘুম: মন ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার ও পর্যাপ্ত ঘুম একান্ত দরকার। খাবারের সময় বদল করবেন না। আর প্রতিদন অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুম খুবই জরুরি। ঘুম আর খাওয়া ঠিক থাকলে আপনার মন এমনিই ভালো থাকবে। হাসি: মন ভালো রাখতে চাইলে হাসি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপায়। তাই প্রাণ খুলে হাসুন। হাসি মস্তিষ্কে এন্ডরফিনের মাত্রা বাড়ায়, যা মানসিক শান্তি প্রদান করে। ঘুরতে বের হন: সপ্তাহে একদিন এমন জায়গায় ঘুরে আসুন যেখানে শান্তি আছে, বা মানুষের ভিড় অনেক কম। এতে মনে প্রশান্তির সৃষ্টি হয়। পারলে খেলাধুলা করুন, সেটা অবশ্যই খোলা মাঠে। পরিষ্কার থাকুন: নিজের বাড়ি বা অফিসের ডেস্ক সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। জামা কাপড়, বই, ম্যাগাজিন সবই নিজের জায়গায় রাখুন। পরিচ্ছন্নতা মন ভালো রাখে। বন্ধুদের ফোন করুন: ম্যাসেজ করবেন না, বন্ধুর সঙ্গে ফোনে কথা বলুন। তাঁকে বলুন আপনার কষ্টের কথা। পরামর্শ চাইতে পারেন তাঁর কাছ থেকে। নতুন কিছু করুন: নেতিবাচক ভাবনা থেকে বেরিয়ে যান। নতুন কিছু করুন। জিমে ভর্তি হোন বা রান্নার ক্লাসে ভর্তি হোন। আগামীকাল সকালে উঠে নতুন কী করবেন তাঁর পরিকল্পনা করুন। এছাড়াও চোখে মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। সুযোগ থাকলে গোসল করে পরিষ্কার কাপড় পরুন। এই সামান্য কাজটাও আপনার মন ভালো করে দিতে পারে।

post
বিশেষ প্রতিবেদন

কিশোরগঞ্জে আলপনায় বৈশাখ

কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনে, গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখানোর প্রত্যয়ে শুরু হলো, আলপনায় বৈশাখ-১৪৩১ উৎসব। মিঠামইন জিরোপয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত, ১৪ কিলোমিটার সড়কে শুক্রবার বিকেলে আলপনা অঙ্কনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলপনায় বৈশাখ। এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মার্কেটিং লিমিটেড,বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও বার্জার পেইন্টস এর যৌথ উদ্যোগে এই আলপনা করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক,এশিয়াটিক-সিক্সটি'র চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নূর এমপি,ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুন অর রশিদ ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদসহ অন্যরা।

post
বিশেষ প্রতিবেদন

আবুধাবিতে প্রবাসীদের ঈদ পুনর্মিলনী

আবুধাবিতে ইউর্স হোম রিয়েল এস্টেট কোম্পানির উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোম্পানির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল বশরের বাড়িতে এ আয়োজন করা হয়। আবুল বশরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাইদুল ইসলাম জাবেদ। এতে প্রধান মেহমান ছিলেন আমিরাতে সফররত আল্লামা হাসান রেজা আল ক্বাদেরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সমিতি ইউএইর সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম তালুকদার, সহসভাপতি আব্দুল কুদ্দুস খালেদ, যুগ্ন সম্পাদক রুহুল আমীন চৌধুরী, মাওলানা মাহমুদ উল্লাহ, কমিউনিটি নেতা ও ব্যবসায়ী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ব্যবসায়ী শওকত হাসান, মোহাম্মদ নাছির, সাইদুল ইসলাম জাবেদ, নজির হোসন, নুর আহমদ বাদশাহ, আব্দুল মজিদ, আবু তাহের, আবু বকর সিদ্দিক, সাইফুদ্দিন, জালাল উদ্দীন, সেলিম সিকদার, মোহাম্মদ আসিফ, ইলিয়াস, ফয়সাল এবং নাইমসহ অনেকে।

post
বিশেষ প্রতিবেদন

ছুটিতেও স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাঘাত ঘটেনি

এবারের ঈদের ছুটিতেও দেশে স্বাস্থ্যসেবায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে আকস্মিকভাবে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন। ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেই মূলত তিনি হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করছেন। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনকালে ডা. স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি গতকালও কয়েকটা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আজকে আরও কয়েকটি হাসপাতালে যাবো। গতকাল দুটি হাসপাতালে গিয়েছি, দুই জায়গাতেই আমি পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স পেয়েছি। আমি সন্তুষ্ট। তিনি আরও বলেন, রোগীদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। সকালে দেশের সব হাসপাতালের পরিচালকদের মেসেজ পাঠিয়েছি৷ আমি এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি, সব জায়গায় চিকিৎসাসেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলছে। কোথাও ব্যত্যয় ঘটেনি।

post
বিশেষ প্রতিবেদন

ভালো চিকিৎসক তৈরিতে কোনো আপস নয়

কোয়ালিটিফুল চিকিৎসক তৈরিতে কোনো আপস করা হবে না বলে উল্লেখ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক। তিনি বলেন, কোয়ালিটিফুল চিকিৎসক তৈরিতে আমরা কোনো আপস করবো না। ভবিষ্যতের জন্য চিকিৎসক তৈরিতে মানের দিক থেকে কোনো ছাড় না দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। রোববার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ। বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন এই অধিবেশনের আয়োজন করে। বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৪ হাজার ৮০৭ জন রেসিডেন্ট চিকিৎসক আছেন। এরমধ্যে ১০০ জন বিদেশি রেসিডেন্ট। তাদের ডিগ্রিটা যেন ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেওয়া হয়। আমরা তাদের পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেবো না। দীন মো. নূরুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাকে এনে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি এখানকার দায়িত্ব চেয়ে নেইনি। আমার ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভরসার পাশাপাশি আমার প্রতি ওনার কিছু চাওয়াও আছে। আমি চেষ্টা করবো এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা, চিকিৎসা ও গবেষণায় বিশ্বে একটি অনুকরণীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়তে।

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.