যুক্তরাষ্ট্র

জাতিসংঘের সামনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

post-img

বাংলাদেশের একুশের প্রথম প্রহরের সঙ্গে মিল রেখে স্থানীয় সময় রোববার নিউইয়র্ক সময় দুপুর ১টা ১ মিনিটে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙ্গালীর চেতনা মঞ্চের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপিত হয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেট, বিভিন্ন রাজনীতিক, পেশাজীবী, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, সাংষ্কৃতিক এবং আঞ্চলিক সংগঠনের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কর্মসূচী উদযাপিত হয়। এর মধ্য দিয়ে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙ্গালীর চেতনা মঞ্চের আয়োজনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর ৩১ বছর পূর্তি হল।

নিউইয়র্ক থেকে খবর ইউএসএনিউজঅনলাইন জানায় স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রবাসী বাংলাদেশিরা জাতিসংঘের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বাঙালির চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বাদশার পরিচালনায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সম্মিলিত কন্ঠে ভাষার গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। সকলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে 'একুশের গান' (আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি) পরিবেশন করলে অমর একুশের শোকাবহ আবহের সৃষ্টি হয়। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দুপুর ১.০১ টায় উপস্থিত সর্বকনিষ্ঠ শিশু তিথির পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পাঘ্য অর্পণ কর্মসূচি শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষে দূতালয় প্রধান রফিকুল ইসলাম ও প্রথম সচিব (প্রেস) মো. নুর এলাহি মিনা, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর পক্ষে ডেপুটি কনসাল জেনারেল এস. এম নাজমুল হাসান।

পরে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য করেন এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাছত আলী, মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী, শিতাংশ গুহ, ফাহিম রেজা নূর, সাাখাওয়াত আলী, ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল, সীকৃতি বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার ভূইয়া, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ভূইয়া, আব্দুন নূর বড় ভূইয়া, আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, ডা. শাহানারা বেগম, ডা. মিতা চৌধুরী, মনোয়ারা বেগম মনি, জাহানারা বেগম লক্ষী, অধ্যাপক হুসনে আরা, ডা. এনামুল হক, চন্দন দত্ত, শেখ আতিকুল ইসলাম, আশফাক মাশুক, শাহীন আজমল, দুরুদ মিয়া রনেল, আলপনা গুহ, গোপাল সান্যাল, মোশাররফ হোসেন, কবি রওশন হাসান, সবিতা দাস, সাহাদাত হোসেন, নূরে আলম জিকু, কাজী রবি-উজ-জামান, দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, শাহাবুদ্দিন চৌধুরী লিটন, আশরাফ আলী খান লিটন, ময়জুর লস্কর জুয়েল, আব্দুল কাদির লিপু, মাহবুবুর রহমান অনিক, সারোয়ার প্রমুখ।

শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ কারী সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ, বাঙালির চেতনা মঞ্চ, মুক্তধারা ফাউন্ডেশন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ইউএসএ, একুশের চেতনা মঞ্চ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যুক্তরাষ্ট্র কমান্ড, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম যুক্তরাষ্ট্র শাখা, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক, চট্রগ্রাম সমিতি, পেষাজীবী সমন্বয় পরিষদ ইউএসএ, বঙ্গবন্ধু প্রচারকেন্দ্র সমাজকল্যাণ পরিষদ, সিলেট গণদাবী পরিষদ, বাংলাদেশ ল সোসইটি ইউএসএ, অনুপ দাশ ডান্স একাডেমী, সুচিত্রা সেন মেমোরিয়াল ইউএসএ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান ঐক্য পরিষদ, শেখ রাসেল স্মৃতি পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গমাতা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরাম ইউএসএ, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি, যুক্তরাষ্ট্র জাসদ, বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদ, শেখ কামাল স্মৃতি পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশ ক্রীড়া চক্র, বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন অব নর্থ আমেরিকা, আবহানী ক্রীড়া চক্র, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ সোসাইটি, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্রঙ্কস, সিলেট বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এলামনাই এসোসিয়েশন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী স্বেচ্ছা সেবক লীগ, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় শ্রমিক লীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ভাষা সৈনিক আবদুস সামাদ পরিবার, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা, জগন্নাথ হল এলামনাই এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাবেক নেতৃবৃন্দ, নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জ সোসাইটি, রাজনগর উন্নয়ন সমিতি, প্রবাসী মতলব সমিতি, নতুন বাংলা যুব সংহতি, মীরসরাই সমিতি ইউএসএ। এছাড়াও নিউইয়র্কে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কবি লেখক শিল্পী সাহিত্যিক-সাংবাদিক, ইউনাইটেড নেশন্সের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।

বক্তারা বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের’ স্বীকৃতি আদায়ে প্রবাসীদের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতিকে চিরজাগ্রত রাখার স্বপ্ন বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে যেতে হবে সকলকে।

অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তারা গত ৩১ বছর ধরে জাতিসংঘের সামনে শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য নিউইয়র্ক সহ আমেরিকার বাংলা সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক-আঞ্চলিক সংগঠন, কবি-লেখক-সাহিত্যিকসহ প্রবাসীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

উল্লেখ্য, বাঙালির রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। এরপর থেকেই যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা বিশ্বে একযোগে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।


সম্পর্কিত খবর

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.