প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ , ২২:৩০ | ভার্জিনিয়া নিউজরুম (এমএমকে)
শপথ নিলেন বাংলাদেশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ইনকর্পোরেশন-বাই'র নতুন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। তারা সংগঠনের সংবিধান মেনে তাদের দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের প্রাচীনতম সংগঠন এই বাই। সম্প্রতি এর ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন হয়ে গেলো। নতুন বছরে এসে বাই যাতে তাদের গৌরবময় পথচলা আরও প্রসারিত করতে পারে সে লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে নতুন কমিটি।
গত ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের বেথেসডায় এই শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। আয়োজনে একই সঙ্গে ছিলো বাই-এর সাধারণ সভা। আর মহান বিজয় দিবস উদযাপন। নাচ-গান-কবিতায় উদযাপিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়।
সুদুর আমেরিকায় বসে বাংলাদেশের জাতীয় দিনগুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করাই বাই-এর অন্যতম প্রধান একটি কাজ। সে কথাই বলছিলেন বাইয়ের সাধারণ সম্পাদক দিলশাদ চৌধুরী ছুটি। সাধারণ সভায় বার্ষিক প্রতিবেদন তুলে ধরছিলেন তিনি।
সাধারণ সভায় বাইয়ের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সালেহ আহমেদ বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য রাখেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম। তুলে ধরা হয় বার্ষিক অর্থ প্রতিবেদন।
সংগঠনের ভবিষ্যত কর্মপন্থা ও পথচলা সুগম করতে করণীয় দিকগুলো নিয়ে সদস্যরা আলোচনা করেন। বিভিন্ন প্রশ্নও উত্থাপন করেন তারা যার উত্তর দেন বিদায়ী ও নতুন কমিটির প্রধানরা। এতে ডিসি, ভার্জিনিয়া, মেরিল্যান্ডের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অন্য রাজ্যগুলো থেকেও যাতে সদস্য নেওয়া হয় সে বিষয়ে প্রস্তাব ওঠে।
কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কথা উঠে আসে আলোচনায় যাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাই এগিয়ে চলেছে। এতে বারবারই উঠে আসে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপের নাম।
পরে ২০২৩-২৪ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত পরিচালনা বোর্ডের সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী। নির্বাচন কমিশনার বশির আহমেদ ও শফি দেলোয়ার কাজল এসময় উপস্থিত ছিলেন।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা হচ্ছেন সভাপতি শফিকুল ইসলাম (মেরিল্যান্ড), সহসভাপতি দিলশাদ চৌধুরী ছুটি (মেরিল্যান্ড), সাধারণ সম্পাদক তাহমিদ শাহরিয়াদ (ভার্জিনিয়া), যুগ্ম সম্পাদক আনিসুজ্জামান খান (ভার্জিনিয়া), কোষাধ্যক্ষ আফরিন বেগম ফেন্সী (মেরিল্যান্ড), পরিচালক মেরিনা রহমান (মেরিল্যান্ড), ফয়সাল করিম (ভার্জিনিয়া), আরিফ আহমেদ (মেরিল্যান্ড), রেহানা কুদ্দুস (ভার্জিনিয়া), ফ্রেন্সিস গোমেজ (মেরিল্যান্ড), তারিক হাবীব (ভার্জিনিয়া), ডোরা গোমেজ (মেরিল্যান্ড), সামিউল ইসলাম (ভার্জিনিয়া), আবুল এহসান ভুঁইয়া (মেরিল্যান্ড)
বাইয়ের সাবেক নেতৃত্বদের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নতুন প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম।
এরপর শুরু হয় বিজয় উদযাপন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই বিজয়ের দিনটিকে স্মরণ করে ডোনা গোমেজ গাইলেন জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো। পরে ফ্রান্সিস গোমেজের কণ্ঠে সকলে শুনলো যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তি সেনা।
ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক আনিস আহমেদ পড়ে শোনালেন স্বরচিত কবিতা ২৫ থেকে ২৬। পরপর দুটি দিনের দুটি উল্টো চিত্র বাংলাদেশের জন্য কতটা কষ্টের ও আবেগ-আনন্দের তা ফুটে উঠেছে এই কবিতায়।
এরপর নাচ। নতুন প্রজন্মে এই দেশে বেড়ে ওঠা ছেলে-মেয়েরা নাচলো ধনধান্য পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা... মুক্তিরও মন্দিরও সোপানও তলে কত প্রাণ হলো বলিদান.... তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবো রে... আর পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্তলাল রক্তলাল রক্তলাল এমন সব মুক্তির প্রাণ জাগানিয়া গানে।
সবশেষে ছিলো নৃত্যনাট্য। বাংলাদেশের কিংবদন্তী শিল্পী লায়লা হাসানের নির্দেশনা ও পরিচালনায় দর্শক দেখলো সব কটা জানালা খুলে দাওনা ওরা আসবে চুপি চুপি যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ এর উপর একটি অনন্য উপস্থাপনা।
এসব উপস্থাপনায় শিল্পীরা ছিলেন মকবুল আহসান টিটো, প্রণব বড়ুয়া, ফারিয়া ইসলাম মাহিন, মারিয়া ইসলাম জাহিন, হারুনুর রশিদ, তিলক কর, সামারা এলাহী, সানিকা এলাহী, রাকিন এলাহী, আহসান সাদাফ, লাবিবা ইসরাত রহমান।
মুক্তিসেনাদের সেই স্মৃতিজাগানিয়া গানের রেশ কানে রেখে দর্শকরা বিদায় নিলো দেশাত্ববোধের নতুন চেতনা নিয়ে।