যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে সাংবাদিক সমাবেশে বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প শোনালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

post-img

নিউইয়র্কে গণমাধ্যম কর্মীদের এক সমাবেশে বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প শোনালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে গোটা বাঙালি জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ বলেই উন্নয়ন-অগ্রগতির ইচ্ছাও অপূর্ণ থাকছে না। ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়-যদি সে ইচ্ছাটি নিষ্ঠা আর আন্তরিকতায় প্রস্ফুটিত থাকে। তা এখন দৃশ্যমান হচ্ছে গোটা দেশে। ‘জিরো থেকে হিরো’-তে পরিণত হয়েছে এক সময়ের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ। এমন একটি দেশে জন্মগ্রহণ করার মধ্যেই সৌভাগ্য রয়েছে।

অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উপস্থাপনকালে সিলেটের সন্তান ড. এ কে এ মোমেন বলেন, আমার নানার বাড়ি হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার সৈয়দপুর গ্রামে। সিলেট শহরের চাঁদনী ঘাট থেকে শীতকালে ঘোড়া অথবা গাধা কিংবা হাতির পিঠে চড়ে এবং অন্য সময়ে নৌকায় নানা বাড়ি যেতে ২৮ ঘণ্টা লাগতো। এজন্যে যখন শেয়ান (তরুণ) হয়েছি তখন আর নানা বাড়ি যেতে চাইতাম না। সর্বশেষ সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে প্রেসিডেন্ট (আমার সম্পর্কে নানীর স্বামী) সিলেট থেকে হেলিকপ্টারে যান নানা বাড়িতে। তার সঙ্গী হয়েছিলাম। এরপর নানাবিধ কারণে দেশ ত্যাগে বাধ্য হই এবং দীর্ঘ ৩৩ বছরের মত প্রবাসে অতিবাহিত করেছি। ২০১৫ সালে স্থায়ীভাবে দেশে ফেরার পর নভেম্বরে নানা বাড়িতে রওয়ানা দেই সিলেট শহরের নিজ বাড়ি থেকে। গাড়িতে উঠে মাত্র ৪৫ মিনিটে নানা বাড়ির গেইটে পৌঁছেছি। অর্থাৎ ২৮ ঘণ্টার পথ অতিক্রম করি ৪৫ মিনিটে। এটাই বাংলাদেশ। এভাবেই সর্বক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য রকমের উন্নতি ঘটেছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। করোনাকালেও প্রবৃদ্ধির হার সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এসব কল্প-কাহিনী নয়-বাস্তব। তাই প্রবাসের সাংবাদিকগণের কাছে অনুরোধ বর্তমান বাংলাদেশকেও যথাযথভাবে উপস্থাপন করুন। প্রবাস প্রজন্মকে বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতি তথা প্রাকৃত্রিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশ মুখী করুন। তবে টিভিতে এমন কোন ফুটেজ প্রচার করা উচিত নয়-যা কোমলমতি সন্তানদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার ঘটায়।

যুক্তরাষ্ট্রে পেশাজীবী সাংবাদিকদের সংগঠন ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ (এবিপিসি)’র ২০২২-২০২৪ মেয়াদের নয়া কার্যকরী কমিটির অভিষেক উপলক্ষে ২৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডে গুলশান টেরেস মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. মোমেন। এবিপিসির বিদায়ী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, পেনসিলভেনিয়া স্টেটের মিলবোর্ন সিটির মেয়র (প্রথম বাংলাদেশী আমেরিকান) মাহবুবুল আলম তৈয়ব, কাউন্সিলম্যান মোশারফ হোসেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মনোয়ার হোসেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের প্রেস মিনিস্টার এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেন, চ্যানেল আই’র পরিচালক জহিরুদ্দিন মাহমুদ মামুন, ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী, কবি ও কলামিস্ট ফকির ইলিয়াস, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্টের ডেলিগেট ফাহাদ সোলায়মান, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া, জেবিবিএর প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুর রহমান টুকু, এবিপিসির নির্বাচন কমিশনার পপি চৌধুরী, এবিপিসির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এবং নয়া প্রেসিডেন্ট রাশেদ আহমেদ।

বক্তারা এবিপিসির অভিষিক্ত কর্মকর্তাগণকে শুভেচ্ছা জানান এবং দেশ ও প্রবাসের ইতিবাচক ইমেজ উপস্থাপনে সাংবাদিকতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান। অনুষ্ঠানের শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান, ড. তনিমা হাদী, শাহ মাহবুব, সবিতা দাস। শুরুতে দেশের গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন অনুপ দাস ড্যান্স একাডেমির শিল্পীরা। অতিথিগণকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানায় ছোট্টমনি আলভি খান, স্নেহা খান, আলিশা খান প্রমুখ।

সাদিয়া খন্দকারের সাবলিল উপস্থাপনায় ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠানে অভিষিক্তরা হলেন সভাপতি-রাশেদ আহমেদ, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট-তপন চৌধরী, সাধারণ সম্পাদক-মো. আবুল কাশেম, যুগ্ম সম্পাদক-শাহ ফারুক, কোষাধ্যক্ষ-জামান তপন, সাংগঠনিক সম্পাদক-আজিমউদ্দিন অভি, প্রচার সম্পাদক-শহিদুল্লাহ কায়সার এবং নির্বাহী সদস্যরা হলেন কানু দত্ত, আলিম খান আকাশ, রাজুব ভৌমিক, প্রতাপচন্দ্র শীল এবং লাবলু আনসার। 

সম্পর্কিত খবর

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.