অভিবাসন

কানাডা তিন বছরে অস্থায়ী বাসিন্দা ৫ শতাংশ কমাতে চায়

post-img

স্থায়ী অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কানাডা আগামী তিন বছরে অস্থায়ী বাসিন্দা ৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে চায়। বর্তমানে কানাডার মোট জনসংখ্যার ৬.২ শতাংশ হচ্ছে অস্থায়ী বাসিন্দা। তাদের স্থায়ীভাবে বসবাস করার কোনো অনুমোদন নেই কিন্তু অস্থায়ীভাবে কাজ করার অনুমোদন রয়েছে। অস্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২.৬ শতাংশ অর্থাৎ ২.৫ মিলিয়ন। আগামী তিন বছরে এটিকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নিয়ে আসা হলে ২০২৭ সালের মধ্যে অস্থায়ী বাসিন্দা পাঁচ লাখ কমে যাবে।

কানাডার রাজধানী অটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মার্ক মিলার। কানাডার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশে অস্থায়ী বাসিন্দা কমানো এবং এবং স্থায়ী অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার।

মন্ত্রী জানান, অস্থায়ী বাসিন্দাদের ২.৬ শতাংশের মধ্যে ৪২ শতাংশ হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট, ৯ শতাংশ অস্থায়ী বিদেশি কর্মী আন্ডার টেম্পোরারি ফরেন ওয়ার্কার প্রোগ্রাম, ৪৪ শতাংশ টেম্পরারি ওয়ার্কার আন্ডার ইন্টারন্যাশনাল মবিলিটি প্রোগ্রাম, ২৬ শতাংশ পোস্ট গ্যাজুয়েট ওয়ার্ক পারমিট হোল্ডার এবং ৯ শতাংশ হচ্ছে স্পাউস অব স্টুডেন্ট।

১০ শতাংশ বিনিময় চুক্তি এবং ১২ শতাংশ হচ্ছে স্পাউজ অফ স্কিল ওয়ার্কার, ২৬ শতাংশ বিভিন্ন হিউম্যানিটি প্রোগ্রাম এবং ৫ শতাংশ অ্যাসাইলাম প্রোগ্রাম।

সংবাদ সম্মেলনে মিলার জানান, বর্তমানে কানাডায় অস্থায়ী বাসিন্দা রয়েছেন ২৫ লাখ। গত ২০২৩ সালে তাদের মধ্য থেকে শতকরা ৬ দশমিক ৫ শতাংশকে কমানো হয়েছে, আগামী ৩ বছরও এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং প্রতি বছর ৫ শতাংশ করে কমানো হবে অস্থায়ী বাসিন্দাদের সংখ্যা।

স্থায়ী অভিবাসনের জন্য আবেদনের অনুমোদনেও নিয়ন্ত্রণ আসবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মার্ক মিলার। তবে এই নিয়ন্ত্রণের হার কেমন হবে— সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি মন্ত্রী। তবে তিনি বলেছেন, সরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত থাকবে এই নিয়ন্ত্রণ।

প্রসঙ্গত, উন্নত জীবনযাত্রা ও সহজ অভিবাসন নিয়ম-কানুনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে কানাডা। দেশটির সরকারও সবসময় অভিবাসীদের স্বাগত জানিয়ে আসছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসী এসেছে দেশটিতে। এতে ব্যাপক সংকট শুরু হয়েছে দেশটির আবাসন ও নাগরিক পরিষেবা খাতে। দিন দিন এই সংকট তীব্র হচ্ছে, ফলে চাপ বাড়ছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর।

সংবাদ সম্মেলনে মার্ক মিলার বলেন, ‘আমরা দেশে অভিবাসীদের আগমন সহনীয় মাত্রায় রাখতে চাই। আবাসন ও অন্যান্য পরিষেবা ইস্যুতে নাগরিকদের যে ভোগান্তি শুরু হয়েছে- তার নিরসন চাই। এ কারণেই এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী মে মাস থেকে এটির বাস্তবায়ন শুরু হবে।’

এর আগে জানুয়ারি মাসে বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং স্নাতক শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যেসব শিক্ষার্থী কানাডায় অবস্থান করছেন, তাদের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিল কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার। অভিবাসন মন্ত্রীর এ ঘোষণার পর অনেক অস্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই শঙ্কায় রয়েছেন কখন তাদের চলে যেতে হয়। অন্যদিকে ভিজিটর ভিসায় এসে যারা অ্যাসাইলাম প্রোগ্রামে আবেদন করেছেন তাঁরাও এক ধরনের উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগেরিতে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত বাংলাদেশি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট নাঈম উল হাসান এ সম্পর্কে সমকালকে বলেন, সম্প্রতি আবাসন সংকট প্রকট আকার ধারণ করার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান ও টিউশন ফি বেড়ে যাওয়ায় ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে। এর মাঝে কানাডিয়ান সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে কানাডাতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী নতুন শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করবে। 

সম্পর্কিত খবর

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.