প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ২৩:২৩ | ঢাকা নিউজরুম (এজে)
মহান অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকল ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আইটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পিপলএনটেক ফাউন্ডেশন ও এর পরিবার।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতবাসের স্থায়ী শহীদ মিনারে ও আর্লিংটনের কেনমোর মিডল স্কুল মিলনায়তনে ডিসি একুশে অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পৃথকভাবে ফুল দিয়ে এই শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পিপলএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ এতে নেতৃত্ব দেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি দেবার সময় প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরা অংশ নেন।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ৭১ বছর আগে ঢাকায় জীবন উৎসর্গকারী ভাষাসৈনিকদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের স্মরণে দুটি কর্মসূচির আয়োজনই ছিলো অনন্য।
২১ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস। একুশের প্রথম প্রহরে প্রভাতফেরী ও শহীদ মিনার ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সন্ধ্যায় দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনাযতনে আয়োজন করা হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পর্ব।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার তাৎপর্য তুলে ধরতে বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তোলা হয় এই আয়োজনে। যাতে বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশের শিল্পীরা একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এই আয়োজনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন পিপলএনটেকের চেয়ারম্যান আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপসহ অন্য কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকবৃন্দ, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।
সকলের সঙ্গে কুশল বিনিমিয়ের পাশাপাশি ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও ইতিহাসে এর অবস্থান নিয়ে কথা বলেন ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও ফারহানা হানিপ।
এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার ভার্জিনিয়ার আলিংটন কেনমোর মিডল স্কুলে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করা হয় ডিসি একুশে অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে।
ডিসি ভার্জিনিয়া মেরিল্যান্ডে বাংলাদেশি কমিউনিটর ২৫ টি সংগঠন নিয়ে গঠিত এই অ্যালায়েন্সের অন্যতম সদস্য পিপলএনটেক ফাউন্ডেশন।
সেখানেও অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান পিপলএনটেক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট ও অন্য কর্মকর্তারা।
এই আয়োজনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষকও ছিলো পিপলএনটেক। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে একুশ উদযাপনের আয়োজনগুলোতে নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছে এই আইটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানটি।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পিএনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ বলেন, "ভাষা আন্দোলন একদিকে আমাদের জন্য শোকের। কারণ এই ভাষার জন্য বাংলার অনেক দামাল ছেলেকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবে আজ বিশ্বজুড়ে দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত ও উদযাপিত হয়। বিষয়টি আমাদের জন্য গর্বের।"
পিপলএনটেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ বলেন, "ভাষা সৈনিকদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষা পেয়েছি, সে সব ভাষা শহীদদের সম্মান জানানো আমাদের যেমন নৈতিক দায়িত্ব তেমনি বিদেশের মাটিতে হলেও সেই ভাষাকে যথাযথ চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সন্তানেরা বিদেশের মাটিতে বেড়ে উঠলেও বাংলা ভাষার চর্চাটা তাদের কাছে পৌছে দেয়ার চেষ্টা করছি। সাথে করে নিয়ে এসে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে মাতৃভাষার বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ, উজ্জীবিত করছি।"
ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ বাংলাদেশের জাতীয় দিনগুলো যুক্তরাষ্ট্রে পালন ও উদযাপনের সকল আয়োজনেই পিপলএনটেকের অংশগ্রহণ ও পৃষ্ঠপোষকতা থাকে।
বিগত কয়েক বছরের মতো এবছরও ডিসি একুশে অ্যালায়েন্স সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি, সাংস্কৃতিক পর্বের মহড়া সম্পন্ন হয়েছে পিপলএনটেকের কার্য্যালয়ের অডিটোরিয়ামে।
এ প্রসঙ্গে পিপলএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা আবুবকর হানিপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও বাংলাদেশকে আমরা ভালোবাসি। এখানে বাংলাদেশি কমিউনিটিকেও আমরা ভালোবাসি। কমিউনিটির আয়োজনে যে কোনো জাতীয় দিবস উদযাপনে পিপলএনটেক পাশে থাকে এবং থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি পিপলএনটেকের বাংলাদেশের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরাও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে এবং একুশে উদযাপনের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেন।