প্রতারক চক্রের নারী সদস্যকে বিয়ে করে ১৮ লাখ টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আলোচিত জল্লাদ শাজাহান। প্রতারিত হওয়ার প্রতিকার ও মৌলিক অধিকার পাওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করেছেন।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি জানান। একটি পিআর সংস্থার মাধ্যমে আইনজীবী নিয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন।
লিখিত বক্তব্যে শাহজাহান বলেন, আমার মা-বাবা নেই, দায়িত্ব নেওয়ার মতো ভাইবোন নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ, আমার থাকার ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিন। আমি চরম অর্থনৈতিক সংকটে আছি। আমার কাজ করার মতো ক্ষমতা নেই। আয়-রোজগার নেই, অর্থের জোগানদাতা নেই, নিজের থাকার জায়গা নেই।
৪৪ বছর কারাভোগ শেষ করে এসে আমি এখন বাইরের মানুষদের বুঝতে পারছি না। যেখানেই যাচ্ছি প্রতারণার খপ্পরে পড়ছি। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিয়ে করে সেখানেও সর্বস্বান্ত হয়েছি। বিয়ের কাবিন পাঁচ লাখ টাকা হলেও আমার কাছে থাকা ১০ লাখ টাকা স্ট্যাম্পে লিখিত নিয়ে ৫৩ দিনের মাথায় আমার স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা (২৩) পালিয়ে গেছে। আমার নামে যৌতুকের মামলা দিয়েছে। আমি থানায় মামলা দিতে গেলেও বউয়ের নামে মামলা করা যায় না বলে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। পরে আইনজীবীর সহযোগিতায় রোববার আদালতে আমার স্ত্রী, শাশুড়িসহ ছয়জনের নামে মামলা দিয়েছি।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ১৮ জুন কারামুক্তির পর আমি ঢাকার কেরানীগঞ্জের গোলামবাজারে বসবাস শুরু করি। এরপর সেখানে একটি চায়ের দোকান দিয়ে কোনো মতে দিন যাপন করার চেষ্টা করি। একদিন অটোরিকশায় কদমতলী থেকে কোনাখালায় যাওয়ার সময় গাড়ির ভেতর একটি ভ্যানিটি ব্যাগ পাই। ব্যাগের ভেতর থাকা কাগজে লেখা ছিল একটি মোবাইল ফোন নম্বর। সেই নম্বরে ফোন করে ব্যাগের মালিককে তা নিয়ে যেতে বলি।
পরে ব্যাগের মালিক সাথী আক্তার ফাতেমা বান্ধবীকে নিয়ে গোলামবাজারে হাজির হয়। এরপরে মেয়েটির মা শাহিনূর বেগমের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। মোবাইল ফোনে মেয়েটির সঙ্গে আমি বেশ কয়েকবার কথা বলি। একপর্যায়ে মেয়েটি ও তার মা জুরাইন থেকে গোলামবাজারে চলে আসে। আমার বাসায় তিনি রান্নার কাজ নেন। পরিচয়ের দেড় মাস পর ২১ ডিসেম্বর মেয়েটির সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আমার বিয়ে হয়। মেয়ে ও তার মা বিয়ের আগে নানা কৌশলে আমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেয়। আর বিয়ের দিন একটি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে আমার গোছানো আরও ১০ লাখ টাকা নেয়।
বিয়ের প্রায় দুই মাসের মাথায় আমার স্ত্রী বাসায় থাকা আরও সাত লাখ টাকা ও গহনা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে থানা নেয়নি। পরে জানতে পারি ১৫ ফেব্র“য়ারি সাথী আমার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা করেছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মহিউদ্দীন, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, মাওলানা নিজামী, কামরুজ্জামানসহ ৪০ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছি। আমাকে ছোট ব্যবসায়ের পুঁজি ও একটি থাকার জায়গা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।